মিহির দেব , ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ
ধান কাটার সুবিধার জন্য সরকার ভর্তুকিমূল্যে কৃষকদের কম্বাইনড হারভেস্টার মেশিন দিচ্ছে। এই মেশিন দিয়ে খুব কম সময়ে ধান কাটা ও মাড়াই করা যায়। একেকটি মেশিনের দাম ২৯ থেকে ৩০ লাখ টাকা। আর এতে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দেয় সরকার। যদি কোনো মেশিনের দাম ২৯ লাখ টাকা হয়, সে ক্ষেত্রে কৃষককে আট লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেই চলে। সরকার এখানে ভর্তুকি দেয় ২০ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
কৃষি বিভাগের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে কৃষকদের ভুর্তকি মূল্যে হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগের শর্ত অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যে এগুলো কেউ বিক্রি করতে পারবে না। তবে নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামের কৃষক ওবায়দুল অভিযোগ করেন, বেশির ভাগ মেশিন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বেচে দিয়েছেন। একটি চক্র সুপরিকল্পিতভাবে এই অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে।
তিনি জানান,দাঁতমন্ডল গ্রামের মলুমিয়া ও রমজান মিয়া (উভয় পিতা মৃত ছিপত আলী) আপন দুই ভাই ভর্তুকি মূল্যে প্রাপ্ত হারভেষ্টার গাড়ী দুটি তার আত্নীয় শফিক মিয়া (কোম্পানীগঞ্জ, কুমিল্লা) র কাছেে বিক্রয় করেছে।
গোকর্ণ গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কৃষক জানিয়েছেন, হারভেষ্টার যন্ত্রগুলো এলাকায় নেই। তাঁর ধারণা, মেশিনগুলো বিক্রি হয়ে গেছে।
ভর্তুকিমূল্যে কম্বাইনড হারভেস্টার মেশিন নিয়েছেন, তাঁদের মধ্য থেকে লক্ষীপুর গ্রামের আরো একজন অভিযুক্ত দপ্তরী হাসান হারভেস্টার মেশিনটি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে।তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মেশিন বিক্রির কথা অস্বীকার করে জানান, মেশিনটির যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছি, তাঁর মেশিনটি বর্তমানে বিশ্বরোড সার্ভিসিং সেন্টারে রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ দেওয়া যন্ত্রগুলো প্রকৃতপক্ষে এলাকায় নেই। যাঁরা মেশিন বরাদ্দ পেয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, এলাকায় চাহিদা না থাকায় এগুলো তাঁরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। এগুলো বিক্রি করা হয়নি।
এ অভিযোগের বিষয়ে নাসিরনগর
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমার কাছেও এ ধরনের অভিযোগ এসেছিল। সরেজমিনে দাঁতমন্ডল গ্রামে মলু মিয়া ও রমজান মিয়ার হারভেস্টার যন্ত্রের খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তারা এগুলো বিক্রি করেনি।’ বর্তমানে এসব হারভেস্টার একটি নবীনগর ও একটি আখাউড়া রয়েছে। এসব যন্ত্র এলাকায় নেই কেন ---এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে স্থানীয়ভাবে চাহিদা কম থাকায় এগুলো এলাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বলে কৃষকরা আমাকে জানিয়েছে।তবে মেশিনগুলো দ্রুত এলাকায় নিয়ে আসার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরও মেশিন বিক্রির প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’তিনি আরো বলেন, ‘ভর্তুকির কৃষিযন্ত্র একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিক্রির নিয়ম নেই। এ অভিযোগ আমরা খতিয়ে দেখব।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মিহির কুমার দেব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: নাসিরনগর থানা রোড, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
মোবাইল : ০১৭২৫-১০১১১১ । ওয়েব:nasirnagarerkhobor.com