মিহির দেব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নৌকার প্রার্থী বি,এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে তার এলাকায় যদি বেশী ভোটে পাশ করাতে গিয়ে একটা (মার্ডার) খুন করতে হয় তাও করতে।
আর এ খুনের সমস্ত দায় দায়িত্ব নেবেন তিনি। নেতাকর্মীদের এমন নির্দেশ দিয়ে বক্তব্য দেয়া এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।তা নিয়ে স্বতন্ত্র সহ অন্যান্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মাঝে বিরাজ করছে আতংক।অবশেষে শেখ জোবায়ের হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ সংসদীয় ২৪৩ নাসিরনগর আসনে নৌকার প্রার্থী বি,এম, ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম কে নৌকায় ভোট দিয়ে জয়ী করতে প্রকাশ্যে খুন করার ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও আ. লীগ নেতা শেখ জোবায়ের হাসান। ১৪ ডিসেম্ভর ২০২৩ রোজ বৃহস্পতিবার উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী সভায় প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য দেন ওই আওয়ামীলীগ নেতা ।তাঁর দেয়া বক্তব্যের ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নাসিরনগর উপজেলা ও গোকর্ণ ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ।
জানা গেছে ১৪ ডিসেম্ভর ২০২৩ রোজ বৃহস্পতিবার উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের গোর্কণ গ্রামের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ,অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নামে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এক নির্বাচনী কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এমন বক্তব্য দেন শেখ জোবায়ের হাসান।তার সেই বক্তব্যের ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।বক্তব্যে তিনি নৌকাকে পাশ করাতে গিয়ে যদি একটি মার্ডার করতে হয় তাহলে সেই মার্ডারের খরচ তিনি নিজে বহন করার কথাও শোনা যাচ্ছে।
বিষয়টি জানতে শেখ জোবায়ের হাসানের সাথে তার মুঠোফোনে কথা হয়, তাঁর এমন বক্তব্য সম্পর্কে নৌকার প্রার্থী এমপি সংগ্রাম অবগত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,এমপি সংগ্রাম কিছুই জানেন না, তিনি নিজ থেকেই এমন বক্তব্য দিয়েছেন।বক্তব্যে একটি মার্ডারের দায় দায়িত্ব নিজে নেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,পুরো বক্তব্যটা এমন ছিলোনা।
এদিকে ভাইরাল হওয়া এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবী করেছে স্থানীয় সাধারন জনগণ।
জানা গেছে শেখ জোবায়ের হাসানের পৈতৃক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের শিমরাইল কান্দি গ্রামে। গোকর্ণ গ্রামে তার নানার বাড়ি।সেই সুবাদে তিনি গোর্কণগ্রামে বাড়ি ও জায়গা জমি ক্রয় করে বসবাস করছেন।তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গোকর্ণ গ্রামে ভোট ও স্থানান্তর করেছেন।দীর্ঘদিন ধরে তিনি গোর্কণ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হওয়ার ওচেষ্টা করে যাচ্ছেন।
৪০ সেকেন্ডের ওই ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে শেখ জোবায়ের হাসানকে প্রকাশ্যে খুন করা নিন্দাজনক ও আপত্তিকর বক্তব্যের পাশাপাশি গোকর্ণ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সমাজপতিদের উদ্দ্যেশ্য করে উস্কানিমূলক আর মানহানিকর বক্তব্য রাখেন তিনি।
শেখ জোবায়ের হাসানের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমরানুল হক বলেন ইতিমধ্যে শেখ জোবায়ের হাসানকে গ্রেপ্তার করেছ পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ( ওসি) মোঃ সোহাগ রানার সাথে ফোন করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।পরে ওসি তদন্ত সঞ্জয় সরকারের সাথে কথা বললে তিনি জোবায়ের হাসানকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করে কোর্টে চালান দেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে গোর্কণ ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সৈয়দ শাহীনের মুঠোফোনে একাদিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ দিকে শেখ জোবায়ের হাসানের ভাইরাল হওয়ায় ও ভিডিও নিয়ে নাসিরনগর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ একরামুজ্জামান সুখন,অন্যান্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মিহির কুমার দেব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: নাসিরনগর থানা রোড, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
মোবাইল : ০১৭২৫-১০১১১১ । ওয়েব:nasirnagarerkhobor.com