মিহির দেব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কেন নৌকার ভরাডুবি! উপজেলার বেশির ভাগ মানুষই মনে করেন অদক্ষ মাঝির কারণে এই ভরাডুবি। উপজেলার বিভিন্ন যায়গায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় এইসব তথ্য।
আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম
তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পুরনে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি ত্যাগী ও প্রকৃত আওয়ামীলীগের,নেতাকর্মীদের কাছে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ,কৃষকলীগকে বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো করে স্বেচ্ছাসেবকলীগ গঠন করেছিলেন। সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের মুল্যায়ন করতে পারেননি।তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে বিএনপি, জামায়াত, স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দফতরের সরকারী কর্মকর্তাদের সাথেও অসৌজন্য মুলক আচরন করেছেন বলে জানা যায়। তিনি দলীয় ত্যাগী কর্মীদের মুল্যায়ন না করে হাইব্রিডদের কাছে টেনেছেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিকদেরকেও হুমকি ধমকি মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা দিয়েও হয়রানি করেছেন।
তাই জনগণ তার বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে। যা এবার ব্যলটের মাধ্যমে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তাকে পরাজিত করেন।
হিন্দু নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করলে বলেন আমাদের নৌকা মার্কা ভালো কিন্তু মাঝি ভালো না যার কারণে আমরা নৌকার মার্কায় ভোট না দিয়ে কলার ছুরি মার্কায় ভোট দিয়ে দিয়েছি।
নাসিরনগর উপজেলা হিন্দু এলাকাই যতগুলো ভোটা কেন্দ্র আছে, বাঘি, তিলপাড়া, সিংহ গ্রাম, নাসিরনগর সদর , এইসব কেন্দ্রগুলো বিশাল ব্যবধানের কলারছড়ি মার্কা বিজয়ী হয়েছেন আর নৌকার ভরাডুবি।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ সংসদীয় ২৪৩ আসনটিতে এর আগে এ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন এডঃ মো. ছায়েদুল হক।
এ আসন থেকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী এডঃ সায়েদুল হক পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি । ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্ভর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এডঃ সায়েদুল হকের মৃত্যুর পর আসনটি শুন্য হয়ে যায় । পরে এ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপনির্বাচনে সাত মাসের জন্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।পরবর্তীতের আবারো তিনি মনোনয়ন পান ও নির্বাচিত হন।
বি,এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নাসিরনগরের আওয়ামীলীগ সকল প্রবীণ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে রেখেছিলেন তিনি।
বির্তকিতদের নিয়ে গঠন করেছে স্বেচ্ছাসেবকলীগ সংগঠন।
নাসিরনগর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল চৌধুরী, নির্মল চৌধুরীর বাবা করতেন জাতীয় পার্টি। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন,
সাখাওয়াত হোসেনের আম্মা কুন্ডা ইউনিয়নের যুব মহিলা দলের সদস্য তাদেরকে এনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৈরি করেছে, এইসব কারনেই বিতর্কিত এই সাংসদের ভরাডুবি হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
তিনি এতো সময় ধরে নাসিরনগরে আওয়ামীলীগের এমপি থাকার পরও আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক লীগ পুর্নাঙ্গ কমিটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি উন্নয়ন মূলক কাজ না করে শুরু করেন উদ্ভোধন প্লেটের খেলা। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় প্রতিশ্রুতি পুরনে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গোয়ালনগরে পর্যটন কেন্দ্র, নাসিরনগ সদরে কারিগরি শিক্ষা কলেজ স্থাপন,রাস্তাঘাট,ব্রিজ কালভার্ট সহ গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন করবেন। সবকিছুতেই তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগের দখলে থাকা আসনটিতে প্রায় অর্ধেক ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি একজন সাফল্য ব্যবসায়ী এস এ কে একরামুজ্জামান সুখন। কলারছড়ি মার্কা পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৪২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১৮৯ ভোট।
উল্লেখ্য : এই আসনে মোট ভোটার ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৪৭জন। পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ১‘শ ৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪‘শ ৩৬ জন এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন।